Chattogram24

Edit Template
Search
Close this search box.
বৃহস্পতিবার, ৯ই মে ২০২৪

আফগানদের গুঁড়িয়ে সুপার ফোরে বাংলাদেশ

Author picture
স্টাফ রিপোর্টার

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আফগানদের সঙ্গে নিজেদের উচ্চতার পার্থক্যটা বুঝিয়ে দিল বাংলাদেশ। হাসমতুল্লাহ শহিদির দলকে ৮৯ রানে হারিয়েছে সাকিব আল হাসানের দল। এর ফলে টাইগাররা ‘বি’ গ্রুপ থেকে সরাসরি এশিয়া কাপের সুপার ফোর নিশ্চিত করেছে বলে জানাল ক্রিকইনফো।

কারও ওপর নির্ভর না করে সুপার ফোরে উঠতে আফগানদের আজ ২৭৯ রানের মধ্যে থামাতে হতো। টাইগার বোলাররা সেটাই করে দেখিয়েছেন। অপরাজিত ১১২* রান এবং ১ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা মেহেদি মিরাজ।

পাহাড়সম রান তাড়ায় নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে আফগানিস্তান।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে দলীয় ১ রানে শরীফুল ইসলামের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন রহমানুল্লাহ গুরবাজ (১)। এরপরই অপর ওপেনার ইব্রাহিম জারদান এবং রহমত শাহ মিলে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন। মরা উইকেটেও বাংলাদেশি বোলাররা দারুণ বোলিং করছিলেন। সেটা সামলে দুজনে গড়েন ৭৮ রানের জুটি।১৮তম ওভারে রহমত শাহকে (৩৩) ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন তাসকিন আহমেদ। এরপর ৫১ বলে ফিফটি তুলে নেন ইব্রাহিম। ২৩.৩ ওভারে আফগানদের স্কোর তিন অংক স্পর্শ করে। ক্রমেই ভয়ংকর হয়ে উঠছিলেন ইব্রাহিম জারদান। শেষ পর্যন্ত তাকে ৭৫ রানে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি করেন হাসান মাহমুদ।

অসাধারণ এক ক্যাচ নিয়েছেন মুশফিক। আফগান ওপেনারের ৭৪ বলের ইনিংসে ছিল ১০টি চার এবং ১টি ছক্কার মার। এর সাথেই অবসান হয় ৫৮ বলে ৫২ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি। এরপর পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন আফগান অধিনায়ক হাসমতুল্লাহ শহিদী। ৫৪ বলে ফিফটি পূরণ করে শরীফুল ইসলামের শিকার হয়েছেন ৫ বাউন্ডারিসহ ৫১ রানে। আগের ওভারেই নজিবুল্লাহ জারদানকে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড করে দেন মেহেদি মিরাজ। ভাঙে ৫২ বলে ৬২ রানের ঝড়ো এক জুটি। ১৯৬ রানে আফগানদের পাঁচ উইকেটের পতন হয়।

স্কোরবোর্ডে আর ১৬ রান যোগ হতেই ১৩ বলে ১৫ রান করা গুলবাদিন নাইবের স্টাম্প ছত্রখান করে দেন শরীফুল ইসলাম। ম্যাচ পুরোপুরি বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। ৬ বলে ৩ রান করা মোহাম্মদ নবিকে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন তাসকিন। করিম জানাতকে (১) সরাসরি থ্রোয়ে রানআউট করেন বদলি ফিল্ডার হিসেবে নামা এনামুল হক বিজয়। এরপর মঞ্চে আবির্ভাব ‘ব্যাটার’ রশিদ খানের। হাত খুলে মারতে শুরু করেন এই তারকা। তার সঙ্গী মুজিব উর রহমান তাসকিনের করা ৪৫তম ওভারের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকান। কিন্তু একইসঙ্গে তার পা লেগে ভেঙে যায় উইকেট!

নিজেই নিজের ‘মৃত্যুর’ কারণ হয়ে ফিরেন ৮ বলে ৪ রানে। সেই তাসকিনের বলেই ১৫ বলে ৩ চার ১ ছক্কায় ২৪ রান করা রশিদ তালুবন্দি হন সাকিবের। ৪৪.৩ ওভারে ২৪৫ রানে অল-আউট হয় আফগানিস্তান। অবসান হয় ১৫ বলে ২৩ রানের ‘ক্যামিও’ জুটি। ৮৯ রানের বড় জয়ে বাংলাদেশ শিবিরে শুরু হয় বিজয়োল্লাস। ৮.৩ ওভারে ৪৪ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন তাসকিন। শরীফুল ৯ ওভারে ১ মেডেনসহ মাত্র ৩৬ রান দিয়ে শিকার করেছেন ৩টি। একটি করে নিয়েছেন হাসান মাহমুদ এবং মিরাজ।

এর আগে আজ রবিবার লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩৩৪ রান তোলে বাংলাদেশ। নাঈম শেখ আর মেহেদি মিরাজ উপহার দেন ১০ ওভারে ৬০ রানের ওপেনিং জুটি। মুজিব উর রহমানের গুগলি বুঝতে না পেরে বোল্ড হয়ে যান ৩২ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ২৮ রান করা নাঈম। ৬ ওয়ানডের ক্যারিয়ারে এটাই তার সর্বোচ্চ স্কোর। তিন নম্বরে নেমে কোনো রান না করে গুলবাদিন নাঈবের বলে ক্যাচ দেন তাওহীদ হৃদয়। এরপরই ইনিংস গড়ার দায়িত্ব নেন মিরাজ এবং নাজমুল হোসেন শান্ত। দুজনে মিলে তৃতীয় উইকেটে গড়েন ১৯০ বলে ১৯৪* রানের জুটি।

১১৫ বলে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া মিরাজ ১১৯ বলে ৭ চার ৩ ছক্কায় ১১২ রানে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়লে জুটির অবসান হয়। ১০১ বলে ৯ চার ২ ছক্কায় ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া শান্তও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ১০৪ রানে রানআউট হয়ে যান। বাংলাদেশের পতন হওয়া পাঁচ উইকেটের তিনটিই রানআউট। মুশফিকুর রহিম ১৫ বলে ১ চার ১ ছক্কায় ২৫ এবং অভিষিক্ত শামীম পাটোয়ারী ৬ বলে ১১ রান করে রানআউট হয়ে যান। শেষদিকে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের ১৮ বলে অপরাজিত ৩২* রানে টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ৩৩৪ রান।