Chattogram24

Edit Template
Search
Close this search box.
বৃহস্পতিবার, ৯ই মে ২০২৪

যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি সর্বোচ্চ প্রস্তুত আছে- বিজিবি মহাপরিচালক

Author picture
স্টাফ রিপোর্টার
তুমব্রু ও ঘুমধুম সীমান্ত পরিদর্শনে বিজিবি মহাপরিচালক….

বান্দরবান প্রতিনিধি:

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সামরিক জান্তার সাথে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর চলমান সংঘর্ষের মধ্যে সীমান্তবর্তী বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু ও ঘুমধুম এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নবনিযুক্ত মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিজিবি’র কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন (৩৪ বিজিবি) এর দায়িত্বপূর্ণ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু ও ঘুমধুম সীমান্ত এবং তৎসংলগ্ন বিওপি পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শনকালে বিজিবি মহাপরিচালক সীমান্তে দায়িত্বরত সকল পর্যায়ের বিজিবি সদস্যদের খোঁজ খবর নেন এবং তাঁদের সাথে মতবিনিময় করেন। এসময় তিনি দেশ মাতৃকার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবাইকে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সীমান্তে উদ্ভূত যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সদা তৎপর থাকার নির্দেশ দেন। একই সাথে তিনি অত্যন্ত দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালনের জন্য দায়িত্বরত সকল বিজিবি সদস্যের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

পরবর্তীতে বিজিবি মহাপরিচালক মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘর্ষের জেরে প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী মায়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি), মায়ানমার সেনাবাহিনী, ইমিগ্রেশন সদস্য, পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থার সকল সদস্যদের খোঁজ খবর নেন এবং আহত অবস্থায় আগত ও হাসপাতালে চিকিৎসারত বিজিপি সদস্যদের সরেজমিনে দেখতে যান।

পরে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বিজিবি’র নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে ধৈর্য ধারণ করে, মানবিক থেকে এবং আন্তর্জাতিক সুসম্পর্ক বজায় রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, অবৈধভাবে আর একজনকেও বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না। দেশ মাতৃকার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সীমান্তে উদ্ভূত যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত রয়েছে বলেও তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, জীবন উপেক্ষা করে সঠিক সংবাদ পরিবেশন এর জন্য এই বর্ডার এলাকা বিভিন্ন ঝুঁকি নিয়ে এবং সঠিক সংবাদ পরিবেশন করছেন সেজন্য সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

সাংবাদিকদের তিনি আরও বলেন, গত কয়েকদিন জানতে পেরেছেন, বিভন্ন তথ্য ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিউজের প্রচারণাও করেছেন। এই পর্যন্ত পাশে বিদ্যালয়ে আমরা আশ্রয় দিয়েছি ২৬৪ জন বিজিপি সদস্যকে, তাদের কে খাবার ও বাসস্থান সবকিছু জোগাড় করে দিচ্ছি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেছি। এরমধ্যে আহত যারা ছিল, তাদের কেও চিকিৎসা প্রদানে ব্যবস্থা করেছি। এই মুহূর্তে ৮ জন আহত রয়েছে, তারমধ্যে কক্সবাজার হাসপাতালে ৪ জনের চিকিৎসাধীন আছে এবং বাকী ৪ জনকে ডাক্তারের পরামর্শ ক্রমে তাদের জীবন রক্ষার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের স্থানান্তর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গত দুইদিনের তুলনায় আজকে ওপারে ফায়ারিং পরিমাণ কম।

এর আগের গোলাবারুদ মর্টারশেল আমাদের অভ্যন্তরে এসে পড়েছে। সেজন্য আমাদের সরকারে সংশ্লিষ্ট সকল পর্যায়ে কাজ করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সেই ধরনের পরামর্শ দিয়েছেন, আমাদের বিজিবি সদস্যদের কে ধৈর্য ধরার কথা বলেছেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দিয়েছি। আমাদের মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন মিটিং হয়েছে, যা পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের অনুরোধে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মিয়ানমারের মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ হয়েছে। এখানে যারা আছে অর্থাৎ মিয়ানমার থেকে আশ্রয় নিয়েছেন, তাদের কে নিয়ে যেতে প্রস্তুত। এই ব্যাপারে পরামর্শ করেছি, যত দ্রুত সম্ভব নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেছি। আমরা আশাবাদী অতি শীঘ্রই এর একটা সমাধান পাবে। এখানে উল্লেখ্য যে, আমার সাথে বিজিপি ডিফেন্স হেডকোয়ার্টার সাথে সাক্ষাৎকার হয়েছে এবং এই বিষয়ে বিস্তারিত বলেছি, কিভাবে তাদেরকে প্রত্যাবর্তন করা যায়।

পরিদর্শনকালীন বিজিবি মহাপরিচালকের সাথে বিজিবি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, কক্সবাজার রিজিয়ন কমান্ডার, রামু সেক্টর কমান্ডার ও কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অধিনায়কসহ বিজিবি’র অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, মায়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে এখন পর্যন্ত মায়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি), মায়ানমার সেনাবাহিনী, পুলিশ, ইমিগ্রেশন সদস্য ও অন্যান্য সংস্থার ২৬৪ জন সদস্য বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাদেরকে সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয়-প্রশ্রয় এবং আহতদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছে।