Chattogram24

Edit Template
Search
Close this search box.
বৃহস্পতিবার, ৯ই মে ২০২৪

রোহিঙ্গাদের অত্যাচারের দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে স্থানীয়দের জীবন

Author picture
স্টাফ রিপোর্টার

উখিয়া প্রতিনিধি:

একদিকে বেড়েছে কক্সবাজারের উখিয়ায় অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের উৎপাত, অন্যদিকে চরম আতঙ্কে দিনাতিপাত করছে উখিয়ার স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রতিনিয়ত কুতুপালং লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সশস্ত্র রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের নির্যাতনের মুখোমুখি হতে হচ্ছে স্থানীয়দের।

“মারধর ও হুমকি-ধমকি, অপহরণ, মুক্তিপণ” এসব কর্মকান্ডের ফলে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে হাজার হাজার স্থানীয় গ্রামবাসীর জীবন। এছাড়াও দ্বন্দ্ব-সংঘাত, সংঘর্ষ, হামলা খুন ও গুমের ঘটনায় উদ্বেগ উৎকন্ঠায় থাকতে হয় তাদের।

উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পার্শ্ববর্তী বাজার কুতুপালং বাজার। এটি একটি জনবহুল বাজার। উপজেলার রাজা পালং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডেই এই বাজার। এর আওতাধীন লম্বাশিয়া ক্যাম্পের অভ্যন্তরে বসবাস করছে শত শত স্থানীয় জনগোষ্ঠী।

ক্যাম্প অভ্যন্তরে বসবাসরত স্থানীয় পরিবার গুলোর অভিযোগ- ২০১৭ সালে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মানবতার খাতিরে স্থান দিতে গিয়ে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে আমাদের জীবন। প্রতিদিন চলাফেরা করতে হয় নানান আতঙ্কে। কারন, প্রতিদিন আমাদের চোখের সামনেই চলে নানান ধরণের অপরাধমূলক ভয়াবহ কর্মকাণ্ড। যার কারনে আমাদের কাটাতে হচ্ছে বন্দী জীবনের মত এক অসহনীয় জীবনযাপন।

এদিকে ক্যাম্প অভ্যন্তরে বসবাসরত মোঃ আয়াছ নামের এক বাংলাদেশী নাগরিক জানিয়েছেন, গত ২২ সেপ্টেম্বর রাতে আমার বোনের জন্য ওষুধ নিয়ে যাওয়ার পথে ৮-১০ জনের একটি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীর দল সাদ্দাম হোসেন (১৭) কে মারধর করে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের চেষ্টা করে। চিৎকার শুনে তাকে রক্ষার জন্য এগিয়ে আসলে ভগ্নিপতি দিলদার মিয়ার উপরও হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় আহত অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার করে উখিয়া হাসপাতালে ভর্তি করে। ওই সময় তাদের নিকট হতে নগদ টাকা ও মোবাইল ছিনতাই করে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে ৮ জন সশস্ত্র রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় লিখিত এজেহার ডায়ের করেছে বলে জানা গেছে।

এ ঘটনার পর থেকে স্থানীয় গ্রামবাসী ও রোহিঙ্গাদের মধ্যে বেশ কয়েকবার কথা কাটি সহ বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা দেখা দেয়। সশস্ত্র রোহিঙ্গাদের গ্রেফতারের দাবিতে গ্রামবাসীরা যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দিতেও দেখা যায়। এ ঘটনা কে কেন্দ্র করে সশস্ত্র রোহিঙ্গাদের হুমকি ও ধমকির ভয়ে ক্যাম্পের অভ্যন্তরে বসবাসরত স্থানীয় গ্রামবাসীরা জিম্মি হয়ে পড়েছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে আরো জানান ‘আমাদের প্রতিদিন যেতে হয় বাজারে। নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী কিনতেও যেতে হয় কুতুপালং বাজারে। তখনও একই পরিস্থিতিতে পড়তে হয় আমাদের। তাছাড়া রোহিঙ্গাদের প্রতিনিয়ত হুমকির মুখে স্কুলে যেতে হয় আমাদের সন্তানদের।

নানান ঘটনায় ভুক্তভোগী স্থানীয় গ্রামবাসী ও পরিবারের সদস্যরা সশস্ত্র রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরআরআরসি সহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট।

রাজাপালং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন জানিয়েছে- অন্তত চারশ’ পরিবার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কাঁটাতারের বেষ্টনিতে বন্দি রয়েছে। তাদের নিরাপত্তায় আমি সবসময় নিজেকে প্রস্তুত রাখি।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী জানিয়েছে- পুলিশ সবসময় স্থানীয়দের নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত। আর রোহিঙ্গারা যেন ক্যাম্প ছেড়ে পালাতে না পারে সেজন্য অভিযান চলমান থাকবে। আর রোহিঙ্গাদের ক্যাম্প ছেড়ে বাইরে আসা ঠেকাতে পুলিশ কঠোর নজরদারি শুরু করেছে।